বাউফলে ইঞ্জিনিয়ার ফারুক তালুকদার মহিলা কলেজে ৩০০০ টাকার বেঞ্চ কেনা হয়েছে ১১,৫৬৭ টাকায়

বাউফলে ইঞ্জিনিয়ার ফারুক তালুকদার মহিলা কলেজে  ৩০০০ টাকার বেঞ্চ কেনা হয়েছে ১১,৫৬৭ টাকায়

বরিশাল.লাইভ, বাউফল প্রতিনিধি: পটুয়াখালীর বাউফলে ইঞ্জিনিয়ার ফারুক তালুকদার মহিলা কলেজে নিন্ম মানের কাঠের বেঞ্চ উচ্চমূল্য ক্রয় দেখিযে সরবরাহ করার অভিযোগ উঠেছে মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের বিরুদ্ধে। সরকারি এই অধিদপ্তরের পক্ষে বাংলাদেশ বনশিল্প উন্নয়ন কর্পোরেশন ফিডকো ফার্নিচার কমপ্লেক্স ইঞ্জিনিয়ার ফারুক তালুকদার মহিলা কলেজে নিন্ম মানের ৫৪জোড়া বেঞ্চ সরবরাহ করেন। নিন্ম মানের বেঞ্চ উচ্চমূল্যে কিনে সরবরাহের বিষয়টি নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক চাঞ্চল্য। বিষয়ে তদন্ত দাবী করেন ওই কলেজের সাধারন শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ইঞ্জিনিয়ার ফারুক তালুকদার মহিলা কলেজের নতুন নির্মিত পাঁচ তলা ভবনের তিন তলার কয়েকটি কক্ষে সারিবদ্ধভাবে সাজানো হচ্ছে কাঠ রঙের প্রলেপ দেয়া বেঞ্চগুলো। এসময়ে বেঞ্চগুলো ভালোভাবে পর্যবেক্ষন করলে দেখা যায়, বেঞ্চগুলোতে কাঠ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে নিন্ম মানের ত্রুটি যুক্ত রাবার গামারি এবং মেহেগুনি কাঠ। কেবল মানের দিক থেকেই নিন্ম নয় অধিকাংশ কাঠই ত্রুটিযুক্ত। বেঞ্চ তৈরীতে ব্যবহৃত কাঠের একাধিক স্থানে রয়েছে ছোট বড় গর্ত। বেশ কিছু বেঞ্চে ছাউনি হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে ফেটে যাওয়া কাঠ। কোথাও আবার কাঠের মধ্যে থাকা গর্তগুলোকে আড়াল করার জন্য কাঠের গুড়ির সাথে আইকা গাম মিশিয়ে তা ভরাট করে দেয়া হয়েছে। এমন নিন্ম মানের প্রতি জোড়া বেঞ্চের দাম ধরা হয়েছে ১১হাজার ৫শ ৬৭টাকা। 

নিন্ম মানের বেঞ্চের এতো উচ্চ মূল্য শুনে চোখ কপালে তুলেছেন ওই কলেজের শিক্ষক শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়রা। স্থাণীয় একাধিক কাঠ ব্যবসায়ীর সাথে আলাপ করে জানা যায়, সরবরাহকৃত ওই মানের একজোড়া কাঠের বেঞ্চের সর্বোচ্চ বাজার মূল্য রয়েছে ৩থেকে সাড়ে ৩হাজার টাকা।

বিষয়ে ইঞ্জিনিয়ার ফারুক তালুকদার মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মোসা. মমতাজ বেগম বলেন, বেঞ্চগুলো নিন্ম মানের এবং ত্রুটিযুক্ত হওয়ায় আমি রিসিভি করি নাই। বিষয়টি আমি আমার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।

বিষয়ে সিডকো ফার্নিচার কমপ্লেক্সের ডিজিএম উত্তম কুমার বসুর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সিডকো ফার্নিচার কমপ্লেক্স পরিবেশ বন মন্ত্রনালয়ের অধীন বিএফআইডিসির একটি প্রতিষ্ঠান। বিএফআইডিসির সাথে মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের চুক্তির আলোকে ওই বেঞ্চগুলো তৈরী এবং সরবরাহ করা হয়েছে। নিন্ম মানের এবং ত্রুটিযুক্ত কাঠ দিয়ে বেঞ্চ তৈরীর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নিন্ম মানের বিষয়টি সঠিক নয়। গামারি এবং রাবার কাঠ দিয়ে ওই বেঞ্চগুলো তৈরী করা হয়েছে। কিছু মেহেগুনি কাঠ থাকতে পারে। আমাদের কাঠগুলো সিজনিং এবং ট্রিটমেন্ট করা হয়। কারনে খরচও কিছুটা বেশি হয়। আর বেঞ্চের মূল্য নির্ধারনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় শিক্ষার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে নির্বাচিত বেসরকারি কলেজ সমূহের উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের পরিচালনা বোর্ড বিষয়ে বলতে পারবেন।

বিষয়ে মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় শিক্ষার মানোন্নয়নের লক্ষে নির্বাচিত বেসরকারি কলেজ সমূহের উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের প্রকল্প কর্মকর্তা তানভির রসুলের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এক্সপার্ট টিম এর দাম নির্ধারন করেছে। নিন্ম মানের এই বেঞ্চের এতো উচ্চ মূল্যে দেখিয়ে সরবরাহ করা হলে ক্ষেত্রে দায় কার জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওই প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘদিন ধরে বিশ^স্ততার সাথে কাজ করছে। এখানে যদি নিন্ম মানের কাঠ দিয়ে বেঞ্চগুলো তৈরী হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ওই বেঞ্চ রিসিভ না করে ফিরিয়ে দিতে পারেন।  আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখবো। যখন বেঞ্চগুলো সরবরাহ করা হয়েছে তখন আপনারা তদারক করেছিলেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। আপনি প্রকল্প পরিচালক মহোদয়ের সাথে কথা বলতে পারেন।

বিষয়ে মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় শিক্ষার মানোন্নয়নের লক্ষে নির্বাচিত বেসরকারি কলেজ সমূহের উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালকের ল্যান্ড ফোনে (০২-৯৫৮৭৮৮৮) একাধিকবার ফোন দিলেও ফোন কলটি রিসিভ করেন নি তিনি।